স্পোর্টস ডেস্ক : গত দুই দিনে বর্ষসেরা টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের জন্য চার জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছিল আইসিসি। তাতে বাংলাদেশের জন্য কোনো সুখবর ছিল না। তবে বৃহস্পতিবার বছর সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার নির্বাচনে মনোনীত চার জনের তালিকা প্রকাশ করতেই বাংলাদেশি ভক্তরা পুলকিত হয়েছে। কারণ একদিনের ক্রিকেটে বর্ষসেরা সেরা হওয়ার দৌড়ে সুযোগ পেয়েছেন সাকিব আল হাসান, তার সঙ্গে লড়াইয়ে থাকা অন্য তিন জন বাবর আজম, জান্নেমান মালান ও পল স্টার্লিং।
বাংলাদেশের বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব এই বছর ৯ ওয়ানডে খেলেছেন। দুটি ফিফটি রয়েছে তার। ৩৯.৫৭ গড়ে মোট রান ২৭৭। এছাড়া ১৭.৫২ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ১৭টি।
জুয়ারিদের প্রস্তাব গোপন করে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এই বছর মাঠে ফেরেন সাকিব। পারফরম্যান্সের ধার এতটুকুও কমেনি। জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ী পারফরম্যান্স করেন। ২০১৯ সালের জুলাইয়ের পর প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমেও ১১৩ রান করেন এবং নেন ৬ উইকেট। স্বাগতিক বাংলাদেশ সিরিজ জেতে ৩-০ তে।
তবে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন সাকিব। তিন ম্যাচে মাত্র ১৯ রান করেন এবং নেন ৩ উইকেট। তবে ঘুরে দাঁড়ান জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তিন ম্যাচের সিরিজে ১৪৫ রান করার পাশাপাশি নেন ৮ উইকেট। স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করার পথে এক বর্ষঞ্জিকায় দ্বিতীয়বার সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব পান।
বর্ষসেরার দৌড়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাবর ছয় ম্যাচে ৬৭.৫০ গড়ে দুটি সেঞ্চুরিসহ ৪০৫ রান করেন। এই বছর মাত্র ৬ ম্যাচ খেললেও দুটি সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ এ সিরিজ নিশ্চিতে দুটি জয়ের ম্যাচেই সেরা খেলোয়াড় হন পাকিস্তানের অধিনায়ক। ২২৮ রান করে সিরিজের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যাটসম্যান ছিলেন।
ইংল্যান্ডের কাছে ৩-০ তে হারার সিরিজে পাকিস্তানের একক যোদ্ধা ছিলেন বাবর। তিন ম্যাচে ১৭৭ রান করেন, কিন্তু সমর্থন পাননি অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানদের। অন্য কোনো ব্যাটসম্যানই তিন ম্যাচ মিলিয়ে ১০০ করতে পারেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার জান্নেমান মালান আট ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফ সেঞ্চুরিতে ৮৪.৮৩ গড়ে ৫০৯ রান করেন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ওয়ানডে অভিষেকের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ৫০ ওভারের সেট আপে দ্রুত নিজেকে প্রতিষ্ঠি করেন তিনি।
মালান এই বছর প্রথম ম্যাচ খেলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে, যখন সিরিজ ১-১ এ সমতায় ছিল। ওই ম্যাচটি হেরে গেলেও মালান ৭০ রান করে আলো ছড়ান। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ২৬১ রান করে শীর্ষ স্কোরার ছিলেন, তিন ম্যাচের ওই সিরিজে হন সেরা খেলোয়াড়। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার ৮৪ রান বিফলে যায় দলের হারে। তবে শেষ ম্যাচে ১৭৭ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেন মালান, দলের স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৩৪৬ রান।
ওই ফর্মের ধারাবাহিকতা দেখা যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও। সিরিজে ১৬২ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। সিরিজে প্রোটিয়াদের একমাত্র জয়ের ম্যাচে মালান কলম্বোর কঠিন ব্যাটিং ট্র্যাকে ১৩৫ বলে ১২১ রান করেন। এই বছর ওয়ানডেতে শীর্ষ ব্যাটসম্যানের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে তিনি।
আয়ারল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক স্টার্লিং খেলেছেন ১৪ ওয়ানডে। তিন সেঞ্চুরি ও দুটি হাফ সেঞ্চুরিতে ৭৯.৬৬ গড়ে ৭০৫ রান করেছেন। এই বছর ওয়ানডেতে রানের হিসাবে তিনিই সবার উপরে।
স্মরণীয় ইনিংসে বছর শুরু করেন স্টার্লিং। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হারের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ তে হারা সিরিজে আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ২৮৫ রান করেন। তিন ম্যাচে ছিল দুটি সেঞ্চুরি। তারপর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও তিন ম্যাচের সিরিজে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। কিন্তু এই সিরিজও আইরিশরা হারে ২-১ এ।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে মাত্র ৫১ রান করেন স্টার্লিং। তবে বছরের শেষ দিকে ফের ফর্মে ফেরেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ড্র সিরিজে তিন ম্যাচে করেন মোট ১০৮ রান।