আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইয়েমেনে সৌদি জোটের নির্বিচারে বিমান হামলা ও সামরিক অভিযান নিয়ে লেবাননের তথ্যমন্ত্রী জর্জ কোরদাহির এক মন্তব্যের জের ধরে নিজেদের দেশে নিযুক্ত লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে সৌদি ও বাহরাইন। দেশ দুটি বলছে, লেবাননের তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ছিল অত্যন্ত ‘আক্রমণাত্মক’।
শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে সৌদি আরব ছাড়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে এবং বৈরুতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে পরামর্শ করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি লেবাননে সৌদি নাগরিকদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে রিয়াদ।
সৌদি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, লেবানন কর্তৃপক্ষের ভুল পদক্ষেপের কারণে রিয়াদ ও বৈরুতের মধ্যে সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে তার জন্য সৌদি সরকার দুঃখিত। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব লেবাননের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাইলেও লেবানন কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে উপেক্ষা করার কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
লেবাননের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার আগে গত ৫ আগস্ট কোরদাহি আলজাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি বলেন, ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের আগ্রাসন ব্যর্থ হয়েছে এবং এখন ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধ করার সময় হয়েছে।
ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলনের পক্ষ নিয়ে তিনি আরও বলেছেন, বাইরের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে আনসারুল্লাহ আন্দোলন। লেবাননের তথ্যমন্ত্রী আরো বলেছেন, সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনের গ্রামাঞ্চল, বিয়ে বাড়ি এমনকি দাফন অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালাচ্ছে।
গত সোমবার সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার করা হয়। তার এ বক্তব্যের জের ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং কুয়েতে নিযুক্ত লেবাননের রাষ্ট্রদূতদেরকেও তলব করে প্রতিবাদ জানানো হয়।
সৌদির পথ অনুসরণে বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশ ত্যাগের জন্য লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে দুই দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। তার সমর্থনে হুথিদের দমনে ইয়েমেনে অভিযান শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।